জেনে নিন দোয়া কুনুত: বাংলা অর্থ, উচ্চারণ, ফজিলত ও পড়ার নিয়ম
জেনে নিন দোয়া কুনুত: বাংলা অর্থ, উচ্চারণ, ফজিলত ও পড়ার নিয়ম
![]() |
জেনে নিন দোয়া কুনুত: বাংলা অর্থ, উচ্চারণ, ফজিলত ও পড়ার নিয়ম |
ভূমিকা:
দোয়া কুনুত ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া যা বিশেষ করে বিতর নামাজে পড়া হয়। এটি মূলত আল্লাহর কাছে দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্তি, ক্ষমা ও সাহায্য চাওয়ার জন্য পাঠ করা হয়। দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থ, উচ্চারণ, ফজিলত এবং পড়ার নিয়ম সম্পর্কে সচেতন হওয়া প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অত্যন্ত জরুরি। এই ব্লগে আমরা দোয়া কুনুতের বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
দোয়া কুনুতের বাংলা অর্থ ও উচ্চারণ:
আরবি:
اللَّهُمَّ اهْدِنِي فِيمَنْ هَدَيْتَ، وَعَافِنِي فِيمَنْ عَافَيْتَ، وَتَوَلَّنِي فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ، وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ، وَقِنِي شَرَّ مَا قَضَيْتَ، إِنَّكَ تَقْضِي وَلَا يُقْضَى عَلَيْكَ، إِنَّهُ لَا يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ، وَلَا يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ، تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ، لَكَ الْحَمْدُ عَلَى مَا قَضَيْتَ، أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইহদিনি ফিমান হাদাইতা, ওয়া আফিনি ফিমান আফাইতা, ওয়া তাওয়াল্লানি ফিমান তাওাল্লাইতা, ওয়া বারিক লি ফিমা আ’তাইতা, ওয়া কিনি শাররামা কাদাইতা, ইন্নাকা তাকদিও ওয়ালা yukদা আলাইকা, ইন্নাহু লা ইয়াজিল্লু মাওয়ালাইতা, ওয়ালা ইয়াজু মাআদাইতা, তাবারাকতা রব্বানা ওয়া তা’আলাইতা।
বাংলা অর্থ:
হে আল্লাহ! তুমি আমাকে তাদের সঙ্গে সঠিক পথে পরিচালিত কর, যাদের তুমি সঠিক পথে পরিচালিত করেছ। আমাকে তাদের সঙ্গে সুস্থতা দাও, যাদের তুমি সুস্থতা দিয়েছ। আমাকে তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কর, যাদের তুমি ঘনিষ্ঠ করেছ। তুমি আমাকে যে দান করেছ তাতে বরকত দাও এবং আমাকে তোমার নির্ধারিত কষ্ট থেকে রক্ষা কর। তুমি যা নির্ধারণ কর, তা কেউ পরিবর্তন করতে পারে না। তুমি যাকে ঘনিষ্ঠ কর, সে কখনও অপমানিত হয় না এবং তুমি যাকে শত্রু বানাও, সে কখনও সম্মানিত হয় না। হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি বরকতময় ও মহান।
আরো পড়ুন এখানে >>
০১.ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত
০২.দৈনন্দিন জীবনের কিছু প্রয়োজনীয় দোয়া |
দোয়া কুনুতের ফজিলত:
দোয়া কুনুতের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের প্রয়োজনীয়তা ও ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য ক্ষমা চাই। এটি শুধুমাত্র বিতর নামাজের জন্য নয়, বরং বিপদের সময় বা যেকোনো বিশেষ প্রয়োজনেও পাঠ করা যায়।
ফজিলতসমূহ:
- আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার মাধ্যম: দোয়া কুনুত পড়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে সাহায্য ও রক্ষা চাওয়া হয়।
- বিপদ থেকে মুক্তি: যেকোনো কঠিন সময়ে এই দোয়া বিশেষ সহায়ক।
- মানসিক শান্তি: এটি পাঠ করলে অন্তরে শান্তি ও স্থিরতা আসে।
- ক্ষমা প্রাপ্তি: দোয়া কুনুত আমাদের পাপ মোচনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
দোয়া কুনুত পড়ার নিয়ম:
দোয়া কুনুত সাধারণত বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে পড়া হয়। এটি কিভাবে পড়তে হয় তা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- তৃতীয় রাকাতে সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা পড়া শেষ করুন।
- রুকুতে যাওয়ার আগে দোয়া কুনুত পড়ুন।
- হাত তুলে আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।
- এরপর রুকু ও সিজদা সম্পন্ন করে নামাজ শেষ করুন।
বিকল্প নিয়ম:
কিছু ক্ষেত্রে দোয়া কুনুত রুকুতে যাওয়ার পরও পড়া যায়। তবে এটি নির্ভর করে মাজহাবের ওপর।
আরো পড়ুন এখানে >>
০১.ইশরাকের নামাজ পড়ার নিয়ম ও ফজিলত
০২.দৈনন্দিন জীবনের কিছু প্রয়োজনীয় দোয়া |
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন:
১. দোয়া কুনুত কি শুধু বিতর নামাজে পড়তে হয়?
না, দোয়া কুনুত বিপদের সময়ও পড়া যায়।
২. দোয়া কুনুত মুখস্থ করা না থাকলে কী করব?
মুখস্থ করার আগে বই থেকে পড়তে পারেন। তবে ধীরে ধীরে মুখস্থ করা উচিত।
৩. শিশুদের দোয়া কুনুত শেখানো যাবে কি?
অবশ্যই। শিশুদের ছোটবেলা থেকে এ দোয়া শেখানো উচিত।
৪. কোন সময়ে দোয়া কুনুত পড়া বেশি উপকারী?
বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাত ছাড়াও ফজরের নামাজে বিপদের সময়ে এটি পড়া উত্তম।
উপসংহার:
দোয়া কুনুত ইসলামী জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া যা আমাদের মানসিক, আত্মিক এবং দৈহিক সুরক্ষার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এটি নিয়মিত পড়া আমাদের ঈমানের গভীরতাকে বাড়িয়ে তোলে। তাই, দোয়া কুনুতের অর্থ, উচ্চারণ, এবং ফজিলত সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করুন এবং এটি প্রাত্যহিক জীবনে চর্চা করুন।