খোশ আমদেদ মাহে রমজান।রোজার নিয়ত, ভঙ্গের কারণ, মাকরুহ, ইফতার এর বিধান || দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম

খোশ আমদেদ মাহে রমজান

 খোশ আমদেদ মাহে রমজান।  রোজার নিয়ত, ভঙ্গের কারণ, মাকরুহ, ইফতার এর বিধানঃ

হান রাব্বল আলামিন আল্লাহতাআলা তাঁর বান্দাদের মুক্তির জন্য যে কয়েকটি বিশেষমাস রেখেছেন তার অন্যতম পবিত্র মাহে রমযান। মাসের ফজিলত বরকত রহমত যে কোন মাস থেকেই বেশি। ইংরেজি মাস অনুযায়ী এবার পবিত্র মাহে। রমযান পবিত্র শবে বরাত এই জুন মাসেই পড়েছে। আর তাই ধর্মপ্রাণ

মুসলমানদের জন্য ইংরেজি এই জুন মাস পবিত্র রমযান শুরু পবিত্র শবে বরাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ পবিত্র রমযানের মাহাত্ম্য এবং গুরুত্ব সম্পর্কে কম-বেশি অবহিত। জন্মের পর থেকেই একজন মুসলিম শিশু আমাদের দেশে বাবা-মা-আত্মীয় পরিজনকে এই বিশেষ মাসে রােযা পালন, ইবাদত বন্দেগীতে ব্যস্ত থেকে মাসটিকে পালন করতে দেখে থাকেন। তাই স্বভাবিকভাবেই এই মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে জন্মের পর বেড়ে ওঠাকালীন বিভিন্নভাবে মানুষ অবহিত হয়ে থাকেন। এই মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে রাসূল (সা)-এর হাদিসে এসেছে- এই পবিত্র মাসটি পেয়েও যে তার জীবনের গুনাহ সমূহকে মাফ করিয়ে নিতে পারলাে না তার মতাে হতভাগা আর নেই। সুতরাং কথা বলার আর অপেক্ষা রাখে না, এই মহিমান্বিত বরকত ফজিলতপূর্ণ মাসটি আমাদের জীবনে কত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান পৃথিবীতে নানাবিধ কারণে একজন মানুষের পক্ষে পাপ অপরাধ থেকে মুক্ত থাকা অসম্ভব রকম কষ্টসাধ্য বিষয়। হয়তাে মনের অজান্তেই আমরা নানারকম পাপ অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ি। আর এই পাপকে ক্ষমা করিয়ে সুষ্ঠু সুন্দর ইহলৌকিক পারলৌকিক জীবনের জন্যই মহান রব্দুল আলামিন তাঁর প্রিয় বান্দাদের জন্য এরকম মহিমান্বিত বরকতময় মাসের ব্যবস্থা রেখেছেন।

পবিত্র রমযান মাসেই বান্দার গুনাহ মাফের জন্য আল তাআলা পবিত্র রজনী লাইলাতুল কদর রেখেছেন। হয়েছে রজনী সহ রাজন থেকেও উত্তম। রমযানেল। শেষ দশকের যে কোন বেজোড় রাতে এই মহিমাসি, রজনী রয়েছে। মুমিন বান্দাগণ রজনীর পরিপ সওয়াব হাসিলের জন্য সারারাত্রি জেগে ইবাদত বন্দেগিতে কাটান। পবিত্র মাহে রমযান মাসে সকল ইবাদতের জন্যই বেশি বেশি সওয়াবের প্রতিশ্রুতিও প্রদান করা হয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি প্রত্যেক মুমিন পবিত্র রমযান মাসেই।

বান্দাই এই মহিমান্বিত মাসের সওয়াব পরিপূর্ণভাবেহাসিল করতে পারবেন। বান্দার গুনাহ মাফের। সুতরাং এই মাসের সঠিক সদ্ব্যবহারে একজন মানুষ জন্য আল্লাহ তাআলা পরিপূর্ণ ইমানদার মানুষে পরিণত হতে পারে। আমরা। পবিত্র রজনীমহান রাব্বল আলামিনের কাছে মুনাজাত জানাই যেনআমরা এই পবিত্র মাসের মর্যাদা বরকত ফজিলত লাইলাতুল কদর পরিপূর্ণভাবে হাসিল করতে পারি। আল্লাহতাআলার দেয়া রেখেছেন। বলা বিধি বিধান মােতাবেক সঠিক পরিপূর্ণভাবে ইহকাল ও। হয়েছে রজনী

পরকলীন ইবাদত বন্দেগী পালন করতে পারি। সহস্র রাজনী থেকেওআমাদের জন্য রয়েছে মহিমান্বিত বরকতপূর্ণ। উত্তম। রমযানের ফজিলতময় শবে বরাত। হাদিস শরীফসমূহে এ। শেষ দশকের যেমহিমান্বিত রজনীর বিবরণ পাওয়া যায়। রজনীতে।

ইবাদত বন্দেগিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ মশগুল থাকেন। কোন বেজোড় রাতে | পবিত্র রজনীতে মহান রাব্বল আলামিন অসংখ্য এই মহিমান্বিত মানুষকে ক্ষমা করে দেন। অনেক প্রখ্যাত আলেম উলেমা রজনী রয়েছে। মুমিন মাশায়েখগণ মতে রজনীতে মহান রাব্বল আলামিন বান্দাগণ রজনীর পরবর্তী বছরের জন্য বান্দাদের রিযিকও বণ্টন করেন। সুতরাং এই মহিমান্বিত রজনীর গুরুত্ব মর্যাদার বিষয়ে পরিপূর্ণ সওয়াব।

আমাদের সকলকেই সজাগ থাকতে হবে। আমরা যাতে হাসিলের জন্য মহিমান্বিত রজনীতে মহান বার্বুল আলামিনের ক্ষমা। সারারাত্রি জেগে তার দেয়া রিযিককে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারি। ইবাদত বন্দেগিতে ।তার জন্য মুনাজাত জানাই।ইংরেজি মাস অনুযায়ী পবিত্র মাহে রমযানের শুরু কাটান ।পবিত্র শবে বরাতের মহিমান্বিত বরকত ফজিলত ' আমরা যাতে সঠিকভাবে হাসিল করতে পারি মহান। আল্লাহর দরবারে তার জন্য মুনাজাত জানাই।

রোজা ভঙ্গের কারণ সমুহঃ

ইচ্ছাকৃত পানাহার করলে।
স্ত্রী সহবাস করলে 
কুলি করার সময় হলকের নিচে পানি চলে গেলে (অবশ্য রোজার কথা স্মরণ না থাকলে রোজা ভাঙ্গবে না)
ইচ্ছকৃত মুখভরে বমি করলে।
নস্য গ্রহণ করানাকে বা কানে ওষধ বা তৈল প্রবেশ করালে।
জবরদস্তি করে কেহ রোজা ভাঙ্গালে 
ইনজেকশান বা স্যালাইরনর মাধ্যমে দেমাগে ওষধ পৌছালে।
কংকর পাথর বা ফলের বিচি গিলে ফেললে।
সূর্যাস্ত হয়েছে মনে করে ইফতার করার পর দেখা গেল সুর্যাস্ত হয়নি।
১০পুরা রমজান মাস রোজার নিয়ত না করলে।
১১দাঁত হতে ছোলা পরিমান খাদ্য-দ্রব্য গিলে ফেললে।
১২ধূমপান করাইচ্ছাকৃত লোবান বা আগরবাতি জ্বালায়ে ধোয়া গ্রহন করলে।
১৩মুখ ভর্তি বমি গিলে ফেললে 
১৪রাত্রি আছে মনে করে সোবহে সাদিকের পর পানাহার করলে।
১৫মুখে পান রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সুবহে সাদিকের পর নিদ্রা হতে জাগরিত হওয়া
 অবস্থায় শুধু কাজা ওয়াজিব হবে।
আর যদি রোজা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে স্বামী-স্ত্রী সহবাস অথবা পানাহার করে তবে কাজা  কাফফারা উভয়ই ওয়াজিব হবে। কাফফারার মাসআলা অভিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামের থেকে জেনে নেবে।
রোজার নিয়ত, ভঙ্গের কারণ, মাকরুহ, ইফতার এর বিধান



রোজার মাকরুহগুলো
অনাবশ্যক কোনো জিনিস চিবানো বা চাখা
*গড়গড় করা বা নাকের ভেতর পানি টেনে নেয়া কিন্তু পানি যদি নাক দিয়ে গলায় পৌঁছে যায়তাহলে রোজা ভেঙে যাবে
ইচ্ছাকৃত মুখে থুথু জমা করে গলাধঃকরণ করা
*গীবত,গালা-গালিঝগড়া-ফাসাদকরা।কেউ গায়ে পড়ে ঝগড়া-ফাসাদ করতে এলে বলবেআমি রোজাদার তোমাকে প্রত্যুত্থর দিতে অক্ষম
সাড়া দিন নাপাক অবস্থায় থাকা। এটি অত্যন্ত গুনাহের কাজ
অস্থিরতা  কাতরতা প্রকাশ করা
কয়লা চিবিয়ে অথবা পাউডারপেস্ট  মাজন ইত্যাদি দ্বারা দাঁত পরিষ্কার করা
যেসব কারণে রোজা না রাখলেও ক্ষতি নেই:
*    কোনো অসুখের কারণে রোযা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেললে অথবা অসুখ বৃদ্ধির ভয় হলে। তবে পরে তা কাযা করতে হবে।
*   গর্ভবতী স্ত্রী লোকের সন্তান বা নিজের প্রাণ নাশের আশঙ্কা হলে রোজা ভঙ্গ করা বৈধ তবে কাযা করে দিতে হবে।
যেসব স্ত্রী লোক নিজের বা অপরের সন্তানকে দুধ পান করান রোজা রাখার ফলে যদি দুধ না আসে তবে রোজা না রাখার  অনুমতি আছে কিন্তু পরে কাযা আদায় করতে হবে।
শরিয়তসম্মত মুসাফির অবস্থায় রোযা না রাখার অনুমতি আছে। তবে রাখাই উত্তম।
কেউ হত্যার হুমকি দিলে রোযা ভঙ্গের অনুমতি আছে। পরে এর কাযা করতে হবে।
কোনো রোগীর ক্ষুধা বা পিপাসা এমন পর্যায়ে চলে গেল এবং কোনো দ্বীনদার মুসলিম চিকিৎসকের মতে রোজা ভঙ্গ না করলে তখন মৃত্যুর আশঙ্কা আছে। তবে রোযা ভঙ্গ করা ওয়াজিব। পরে তা কাযা করতে হবে।
*হায়েজ-নেফাসগ্রস্ত (বিশেষ সময়েনারীদের জন্য রোজা রাখা জায়েজ নয়। পরবর্তীতে কাযা করতে হবে।
রোজার নিয়তঃ
নাওয়াইতু আন আছুমাগাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদ্বল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নীকা আন্তাস সামিউল আলীম।
ইফতারির দোয়াঃ
আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া তাওয়াক্কালতু আলা রিজক্কিকা আফতারতু বি-রহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমীন।
আসুন ভাই আমরা সবাই রমজানের রোজা রাখি এবং রমজানের প্রকৃত শিক্ষা গ্রহন করি।
আমীন
 






Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url